শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবন অনেকটা চিত্রনাট্যের মতো। উনি ব্যারিষ্টারী পেশা থেকে যা আয়-উপার্জন করতেন তাঁর সিংহভাগই দরিদ্র, অসুস্থ্য নেতা-কর্র্মীদের কাছে প্রতিমাসে মানি অর্ডারে টাকা পাঠাতেন।
ত্রিশের দশকে সোহরাওয়ার্দী অবিভক্ত বঙ্গীয় মুসলিম লীগের হাল ধরেন। তখন প্রাদেশিক মুসলিমলীগ দুটি উপদলে বিভক্ত ছিল। একদিকে খাজা নাজিমুদ্দিন ও মাওলানা আকরাম খাঁ অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেম। এই প্রভাব ছাত্রদের মাঝেও বিভক্তি আনে। তৎকালীন ছাত্রনেতা শাহ আজিজুর রহমান গং খাঁজা নাজিম উদ্দিন পন্থী আর ডাকসাইটে ছাত্রনেতা শেখ মুজিব গং ছিলেন সোহরাওয়ার্দী পন্থী। এরই ধারাবাহিকতায় ’৪৬ সনের সাধারণ নির্বাচনে শেরে বাংলার কৃষক-প্রজা পার্টিকে পরাজিত করে নিরঙ্কুস বিজয় অর্জন করে। অত:পর সোহরাওয়ার্দী হন বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ’৪৭সনের দেশ ভাগের পর দাবার গুটির চালে পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হন খাঁজা নাজিম উদ্দিন।
হোসেন সোহরাওয়ার্দীর অনুপ্রেরণায় ’৪৯ সনের ২৩ই জুন ঢাকায় ‘আওয়ামী মুসলীমলীগ’ দলটি আত্মপ্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, তাঁর মেধা ও দক্ষতাগুনে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় এবং ’৫৪ সনের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের আইনমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে শাসনতন্ত্র রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এবং পূর্ব বাংলার অবহেলিত গণমানুষের দাবীদাবা অক্ষরে লিপিবদ্ধ করেন। এই মহতি রাজনীতিবিদের ভারত ও পাকিস্তানে এক টুকরো জমি ছিল না। কলকাতার ৪০ নং থিয়েটার রোডের বাড়িটি ছিল ভাড়াবাড়ি। আর পূর্বপাকিস্তানে অবস্থান করলে, উনি হোটেল কিংবা শুভাকাঙ্খীদের বাড়িতে থাকতেন। আর পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান করলে হোটেল কিংবা মেয়ের বাড়িতে থাকতেন। অত:পর উনি ’৬৪ সালে বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।
শাফায়েত জামিল রাজীব
সম্পাদক
একুশে টাইমস্